ইমাম আকরাম হোসেন দাঁড়িয়ে ছিলেন ইলেক্ট্রিসিটির পিলারটার নিচে। আরশিই তাকে প্রথম দেখল। তার আর তখন অত কিছু ভাবার অবস্থা নেই। সে তখন ঘোরগ্রস্ত এক মানুষ। তীব্র আতঙ্কে দিশেহারা। সে ইমাম সাহেবের দিকে অর্ধেকটা পথ দৌড়ে এসে হঠাৎ লুটিয়ে পরল কাদায়। ইমাম সাহেব যখন তাকে তুললেন, তখন আরশির শরীর থরথর করে কাঁপছে। আর সে বিড়বড়ি করে একটা মাত্র কথাই বলছে, আমি কিছু দেখি নাই। আমি কিছু দেখি নাই। আমি কিছু দেখি নাই ইমাম আকরাম হোসেন বুদ্ধিমান মানুষ। তিনি যা বোঝার বুঝে নিলেন। আরশিকে কাঁধে করে নিয়ে তিনি নেমে এলেন যযাতিপুর বাজার পেরিয়ে নদীর ঘাটে। সেখানে সারি সারি নৌকা বাঁধা। তিনি দেখে শুনে একখানা ছইঅলা নৌকায় উঠে পড়লেন। বিপত্তি বাঁধাল তালা। গাছের সাথে লোহার শেকল দিয়ে তালা মেরে বেঁধে রাখা হয়েছে নৌকাগুলো। অবশ্য তালা ভাঙতে খুব একটা বেগ পেতে হল না তার। আরশিকে ছইয়ের ভেতর শুইয়ে রেখে নৌকা ছাড়লেন ইমাম সাহেব। কিন্তু কোথায় যাবেন তিনি? আরশি বা তার, কারও জন্য আর যযাতিপুরে থাকা সম্ভব না। কোনভাবেই সম্ভব না। যযাতিপুর মানেই এখন তাদের জন্য অবধারিত মৃত্যু। সুতরাং যতটা দূরে সরা যায়। ইমাম সাহেব হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিলেন, তিনি নৌকা বেয়ে নদীর আড়াআড়ি চলে যাবেন। গন্তব্য রাঙারোড। রাঙারোড থেকে কোন একটা ব্যবস্থা করে নিবেন। আরশি রাঙারোড যেতে পারে, লোকমান এটা ধরণাও করতে পারবে না। ইমাম সাহেব রাঙারোড থেকে সোজা চলে যাবেন পিরোজপুর। তার গ্রামের বাড়ি। তারপর বাকিটা ভাবা যাবে। ইমাম আকরাম হোসেন আল্লাহর নাম নিয়ে বৈঠা ডুবালেন পানিতে। তখন শো শো করে বয়ে যাচ্ছে ঝড়ো বাতাস। উত্তাল হয়ে উঠছে নদী। তুমুল বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে চরাচর। নিকষ অন্ধকারে ঢেকে আছে রাতের পৃথিবী। সেই ভয়াবহ দূর্যোগের রাতে ওই অসীম মহাশুন্যের ওপারে বসে কেউ একজন হয়তো লিখে চলেছেন অন্য এক গল্প।
ইমাম আকরাম হোসেন দাঁড়িয়ে ছিলেন ইলেক্ট্রিসিটির পিলারটার নিচে। আরশিই তাকে প্রথম দেখল। তার আর তখন অত কিছু ভাবার অবস্থা নেই। সে তখন ঘোরগ্রস্ত এক মানুষ। তীব্র আতঙ্কে দিশেহারা। সে ইমাম সাহেবের দিকে অর্ধেকটা পথ দৌড়ে এসে হঠাৎ লুটিয়ে পরল কাদায়। ইমাম সাহেব যখন তাকে তুললেন, তখন আরশির শরীর থরথর করে কাঁপছে। আর সে বিড়বড়ি করে একটা মাত্র কথাই বলছে, আমি কিছু দেখি নাই। আমি কিছু দেখি নাই। আমি কিছু দেখি নাই ইমাম আকরাম হোসেন বুদ্ধিমান মানুষ। তিনি যা বোঝার বুঝে নিলেন। আরশিকে কাঁধে করে নিয়ে তিনি নেমে এলেন যযাতিপুর বাজার পেরিয়ে নদীর ঘাটে। সেখানে সারি সারি নৌকা বাঁধা। তিনি দেখে শুনে একখানা ছইঅলা নৌকায় উঠে পড়লেন। বিপত্তি বাঁধাল তালা। গাছের সাথে লোহার শেকল দিয়ে তালা মেরে বেঁধে রাখা হয়েছে নৌকাগুলো। অবশ্য তালা ভাঙতে খুব একটা বেগ পেতে হল না তার। আরশিকে ছইয়ের ভেতর শুইয়ে রেখে নৌকা ছাড়লেন ইমাম সাহেব। কিন্তু কোথায় যাবেন তিনি? আরশি বা তার, কারও জন্য আর যযাতিপুরে থাকা সম্ভব না। কোনভাবেই সম্ভব না। যযাতিপুর মানেই এখন তাদের জন্য অবধারিত মৃত্যু। সুতরাং যতটা দূরে সরা যায়। ইমাম সাহেব হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিলেন, তিনি নৌকা বেয়ে নদীর আড়াআড়ি চলে যাবেন। গন্তব্য রাঙারোড। রাঙারোড থেকে কোন একটা ব্যবস্থা করে নিবেন। আরশি রাঙারোড যেতে পারে, লোকমান এটা ধরণাও করতে পারবে না। ইমাম সাহেব রাঙারোড থেকে সোজা চলে যাবেন পিরোজপুর। তার গ্রামের বাড়ি। তারপর বাকিটা ভাবা যাবে। ইমাম আকরাম হোসেন আল্লাহর নাম নিয়ে বৈঠা ডুবালেন পানিতে। তখন শো শো করে বয়ে যাচ্ছে ঝড়ো বাতাস। উত্তাল হয়ে উঠছে নদী। তুমুল বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে চরাচর। নিকষ অন্ধকারে ঢেকে আছে রাতের পৃথিবী। সেই ভয়াবহ দূর্যোগের রাতে ওই অসীম মহাশুন্যের ওপারে বসে কেউ একজন হয়তো লিখে চলেছেন অন্য এক গল্প।